দুর্ঘটনাটি ঘটার পর থেকেই কিছু তথ্য ছড়ানো হচ্ছে সামাজিক মাধ্যমে। বলা হচ্ছে- নিবিড়ের গাড়ি চালানোর অনুমতি ছিল না। তার কোনো লাইসেন্স ছিল না। কোমায় থাকা নিবিড়কে নিয়ে এ ধরনের আলোচনা কুমার বিশ্বজিতের পরিবার পর্যন্ত পৌঁছেছে। সংগীতশিল্পী কুমার বিশ্বজিতের একমাত্র ছেলে নিবিড় কুমার কানাডায় সড়ক দুর্ঘটনায় আহত হয়ে আইসিইউতে চিকিৎসাধীন। একই দুর্ঘটনায় নিহত হন নিবিড় কুমারের তিন বন্ধু শাহরিয়ার খান, অ্যাঞ্জেলা বাড়ৈ ও আরিয়ান দীপ্ত। বিষয়টি নিয়ে মুখ খুলেছেন নিবিড়ের চাচা অভিজিৎ দে। তিনি জানিয়েছেন, নিবিড়ের গাড়ির চালানোর লাইসেন্স ছিল এবং সেটার মেয়াদও ছিল। প্রমাণস্বরূপ নিবিড়ের ড্রাইভিং লাইসেন্সের ছবিও প্রকাশ করেছেন তিনি।
নিজের ফেসবুকে অভিজিৎ লিখেছেন, ‘জীবনের এই ক্রান্তিকালে আমাদের পরিবারের সঙ্গে কী ঘটছে তা নিয়ে আজ কিছু কথা বলতে চাই। আমাদের নিবিড় একটি ভয়াবহ দুর্ঘটনায় আহত হয়ে টরন্টোর সেন্ট মাইকেল হাসপাতালে মৃত্যুর সঙ্গে লড়াই করছে। ওই দুর্ঘটনায় সে তার তিনজন ভালো বন্ধু হারিয়েছে; আমাদের স্নেহের আরিয়ান, শ্রেয়া ও মাহির চাচ্চু।’
এরপর তিনি লেখেন, ‘নিবিড়ের বিরুদ্ধে কিছু মিথ্যা তথ্য ও অভিযোগ আনা হয়েছে যা আমাদের হতবাক করেছে। অভিযোগগুলো তার ড্রাইভিং লাইসেন্স, নিবন্ধন ও যানবাহন বীমা সম্পর্কিত। আজ আমরা ওপিপি অফিসার (অন্টারিও প্রাদেশিক পুলিশ কর্মকর্তা) মার্কের সঙ্গে একটি মিটিং করেছি। তিনি জানিয়েছেন যে, নিবিড়ের লাইসেন্স, নিবন্ধন ও বীমা বৈধ। এখন আমার কথা হচ্ছে, আপনারা কেন তদন্ত চলমান বিষয়টি নিয়ে মিথ্যা খবর ছড়াচ্ছেন?’
অভিজিৎ আরও লিখেছেন, ‘আমি জানি যে বাংলাদেশের মিডিয়া ও জনগণ কানাডার নিয়ম-কানুন সম্পর্কে অবগত না। তবে যারা কানাডায় বসবাস করছেন তাদের সকলের জানা উচিত যে এখানে প্রয়োজনীয় কাগজপত্র ছাড়া কাউকে রাস্তায় চলতে দেওয়া হয় না। তাই তদন্ত চলাকালীন, কোনো রায় না দেওয়া পর্যন্ত বিভ্রান্ত না হয়ে এই ভয়াবহ পরিস্থিতিতে আমাদের পরিবারের সঙ্গে থাকার জন্য আপনাদের অনুরোধ করছি।’
গত ১৩ ফেব্রুয়ারি কানাডার টরন্টো শহরে স্থানীয় সময় রাত সাড়ে ১১টায় কুমার বিশ্বজিতের একমাত্র সন্তান নিবিড় এবং তার তিন বন্ধু আরিয়ান দীপ্ত, শাহরিয়ার খান মাহির ও এঞ্জেলা শ্রেয়া বাড়ৈ সড়ক দুর্ঘটনার শিকার হন। দুর্ঘটনায় প্রাণ হারান আরিয়ান, মাহির ও শ্রেয়া।
অন্টারিও প্রাদেশিক পুলিশ (ওপিপি) সূত্রে জানা যায়, টরন্টোর হাইওয়ে ৪২৭-এর ডানডাস স্ট্রিট ওয়েস্টে একটি গাড়ি দুর্ঘটনার শিকার হয়। এতে চালকের আসনে ছিলেন নিবিড়। গাড়িটি খুব দ্রুতগতিতে চলছিল। এক হাইওয়ে থেকে আরেক হাইওয়েতে ওঠার সময় টার্ন নিতে গিয়ে নিয়ন্ত্রণ হারিয়ে ফেলে। সেখানে একটু কার্ভ ছিল। হাইওয়ের রেলিংয়ে গিয়ে ধাক্কা খেয়ে গাড়িটি ৩ বার উল্টে যায়। সঙ্গে সঙ্গে গাড়িতে আগুন ধরে যায়।