সোমবার এক বিজ্ঞপ্তিতে এ তথ্য জানায় আইএফসি। কোভিড-১৯ পরিস্থিতি মোকাবিলায় প্রাইম ব্যাংকে ৫০ মিলিয়ন মার্কিন ডলার ঋণ দিয়েছে বিশ্বব্যাংকের বিনিয়োগ সংস্থা ইন্টারন্যাশনাল ফাইন্যান্স করপোরেশন (আইএফসি)। এ তহবিল ব্যাংকটির অফশোর ব্যাংকিং ইউনিট থেকে ঋণের মাধ্যমে রপ্তানি ও আমদানিভিত্তিক প্রতিষ্ঠানের চলতি মূলধন, বাণিজ্য অর্থায়ন এবং বৈদেশিক মুদ্রার তারল্য চাহিদা পূরণ করতে সহায়তা করবে।আইএফসি জানায়, এ অর্থায়ন প্যাকেজ আইএফসির ‘ফাস্ট ট্র্যাক কোভিড-১৯ সুবিধা’ এর অংশ। চলতি মূলধন সমাধান কর্মসূচির অধীনে অতিমারির প্রভাব মোকাবিলায় বিভিন্ন দেশ ও বেসরকারি খাতের সহায়তার জন্য প্যাকেজটির পরিকল্পনা করা হয়। প্রাইম ব্যাংকের সঙ্গে আইএফসির এই সম্পৃক্ততা ইন্টারন্যাশনাল ডেভেলপমেন্ট অ্যাসোসিয়েশনের (আইডিএ) প্রাইভেট সেক্টর উইন্ডোর মিশ্রণ অর্থায়ন সুবিধা দ্বারাও সমর্থিত হবে।

বাণিজ্যিক ব্যাংকগুলো বাংলাদেশের অর্থনীতির চালিকাশক্তি। উৎপাদন ও অবকাঠামো ব্যবসায় চলতি মূলধন এবং বৈদেশিক মুদ্রায় বাণিজ্য অর্থায়ন সহায়তার বৃহত্তম সরবরাহকারী। ইউক্রেনে রাশিয়ার আগ্রাসন ও এর ফলে যুদ্ধের কারণে বিশ্বে অপ্রত্যাশিত অস্থিরতা বাজারে বৈদেশিক মুদ্রার তারল্যকে বাধাগ্রস্ত করছে। এই অর্থায়নের মাধ্যমে প্রাইম ব্যাংক তার আমদানি ও রপ্তানি-ভিত্তিক গ্রাহকদের জন্য ঋণ সম্প্রসারণ করবে বলে আশা করা হচ্ছে। যা ব্যবসা সচল, পুনরায় রপ্তানি শুরু ও এসব প্রতিষ্ঠানে কর্মসংস্থানের নিরাপত্তা  নিশ্চিতে সহায়তা করবে।

প্রাইম ব্যাংকের ব্যবস্থাপনা পরিচালক ও প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা হাসান ও. রশীদ বলেন, আইএফসির সহায়তা দেশের অর্থনীতির টিকে থাকার সামর্থ্য ও প্রাইম ব্যাংকের প্রতি আস্থার প্রতিফলন। ২০১৪ সাল থেকে প্রাইম ব্যাংকে আইএফসির মূল্যবান অংশীদার। এ সম্পর্ক আমাদের অফশোর ব্যাংকিং ইউনিট ব্যবসা সম্প্রসারণে উল্লেখযোগ্যভাবে সাহায্য করছে। আইএফসির অব্যাহত সমর্থনের জন্য আমরা সত্যিই কৃতজ্ঞ। এসএমই গ্রাহকদের টার্গেট করা ৫০ মিলিয়ন মার্কিন ডলারের এই সুবিধা প্রাইম ব্যাংকের এসএমই পোর্টফোলিও উন্নয়নে সহায়তা করবে।

প্রাইম ব্যাংক বাংলাদেশের বেসরকারি বাণিজ্যিক ব্যাংকগুলোর মধ্যে অন্যতম প্রধান ব্যাংক। আইএফসি তার গ্লোবাল ট্রেড ফাইন্যান্স প্রোগ্রামের (জিটিএফপি) অধীনে ‘দক্ষিণ এশিয়ায় সরঞ্জাম বাণিজ্যের জন্য ২০২১ অর্থবছরের সেরা অংশীদার ব্যাংক’ হিসেবে প্রাইম ব্যাংককে পুরস্কৃত করে। এই প্রকল্পটি প্রাইম ব্যাংকের জন্য আইএফিসর চতুর্থ ধাপের চলতি মূলধন (ডব্লিওসিএস) সহায়তা, যা একটি দীর্ঘস্থায়ী অংশীদার ব্যাংকের গুরুত্বপূর্ণ অর্থায়ন সেবা দেওয়ার সক্ষমতা বাড়ায়। একই সাথে বাংলাদেশের বাণিজ্য অর্থায়ন বাজারের  সামর্থ্য বাড়াতে সহায়তা করবে।

আইএফসির আঞ্চলিক শিল্প পরিচালক অ্যালেন ফোরলেমু বলেন, এটি স্পষ্ট যে করোনার প্রভাব এখনো বাংলাদেশের মূল শিল্পগুলোর অনেক ব্যবসায় এখনো   অনুভূত হচ্ছে। কার্যকরভাবে তাদের পরিচালনার ক্ষমতাকে বাধাগ্রস্ত করছে। এ তহবিল প্যাকেজ বাংলাদেশে ব্যবসা প্রতিষ্ঠানের জন্য বিশেষভাবে ডিজাইন করা হয়েছে। যাতে তারা বাণিজ্য চলমান রাখতে পারে ও চলতি মূলধনের সুবিধা পেতে পারে, যা তাদের কার্যক্রম বজায় রাখতে ও কর্মসংস্থান সংরক্ষণে সহায়তা করবে। ক্ষুদ্র ও মাঝারি আকারের ব্যবসা, যা এই দেশের মেরুদণ্ড এবং অতিমারির কারণে বিশেষভাবে ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। আইএফসির এই তহবিল থেকে এসব প্রতিষ্ঠান সবচেয়ে বেশি উপকৃত হবে বলে আশা করা হচ্ছে।

আইএফসি করোনা সংকটের শুরু থেকে এ পর্যন্ত প্রাইম ব্যাংকের জন্য এই নতুন তহবিলসহ ব্যাংকগুলোর জন্য চলতি মূলধন সহায়তা এবং কোম্পানিগুলোর জন্য তারল্য সহায়তা হিসেবে মোট ৩১০ মিলিয়ন মার্কিন ডলার দিয়েছে।

২০১০ সাল থেকে আইএফসি বাংলাদেশে বেসরকারি খাতের প্রবৃদ্ধিতে সহায়তা করতে তিন দশমিক ছয় বিলিয়ন ডলার বিনিয়োগ করেছে। যা দেশের জনগণের জন্য কর্মসংস্থান সৃষ্টি করেছে বলে দাবি করেছে আইএফসি।