খাগড়াছড়ির রামগড় উপজেলায় ইউপিডিএফের প্রসীত গ্রুপের সন্ত্রাসীদের হামলায় ২ জন সিএনজি চালক ও একজন কৃষি শ্রমিক গুরুতর আহত হয়েছেন। এ ঘটনার প্রতিবাদে সিএনজি চলক সমবায় সমিতি আজ রবিবার (১২ ফেব্রুয়ারি) উপজেলার তিনটি সড়কে ধর্মঘট পালন করছে। সংশ্লিষ্টরা জানান, শনিবার (১১ ফেব্রুয়ারি) রাতেরবেলা রামগড় উপজেলার প্রেমতলা নামক স্থানে ইউপিডিএফের প্রসীত গ্রুপের এক অস্ত্রধারী সন্ত্রাসী মোবাইল ফোনে কল করে ডেকে নিয়ে সিএনজি চালক আবুল কালাম(৫৫) ও সাইফুল ইসলাম(২৮)-কে অমানুষিকভাবে নির্যতন এবং লাঠি আঘাত করে আহত করেছে।
তারা দুজন সম্পর্কে জামাই-শ্বশুর এবং উপজেলার কাশিবাড়ি গ্রামের বাসিন্দা। ঐই সময়ে ঐ সন্ত্রাসীরা কৃষি শ্রমিক সাইফুল(৩০)-কে নুরপুর এলাকা থেকে মোটরসাইকেলে করে তুলে নিয়ে যায় প্রেমতলা এলাকায় তারপর প্রচণ্ড মারধর করে আহত করে। তিনি নুরপুর গ্রামের মৃত শামছুল হকের ছেলে। স্থানীয় লোকজন খবর পেয়ে সন্ধ্যা ৬টার দিকে প্রেমতলা থেকে তাদেরকে উদ্ধার করে আহতদের কে উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে ভর্তি করান। হাসপাতালে চিকিৎসাধীন আহত সিএনজি চালক আবুল কালম বলেন, বিকাল ৩টার দিকে তার মেয়ের জামাই সাইফুল ইসলামকে ইউপিডিএফের সন্ত্রাসী সজল ত্রিপুরা মোবাইল ফোনে কল করে তাদের দুজনকে প্রেমতলায় ডেকে নেয়। তারা ভাড়া করা মোটরসাইকেলে করে প্রেমতলায় গেলে সন্ত্রাসী সজল ত্রিপুরা প্রথমে আবুল কালামকে মন্দিরের সামনে নিয়ে চোখমুখ বেধে শক্ত লাঠি দিয়ে এলোপাথারি পিটাতে থাকে। এক পর্যায়ে তার মাথায় অস্ত্র ঠেকিয়ে গুলি করে হত্যার হুমকি দেয় ওই সন্ত্রাসী। পরে তার মেয়ের জামাইকে ঐ স্থানে নিয়ে একইভাবে নির্যাতন করে। এসময় সন্ত্রাসী সজল তাদের কছে দুই লাখ টাকা দাবি করে। কালাম ও সাইফুল জানান, বিজিবির র্সোস সন্দেহ করে এবং বিভিন্ন যাত্রীদের কাছ থেকে অতিরিক্ত ভাড়া নেওয়ার মিথ্যা অজুহাতে তাদেরকে অমানুষিকভাবে পিটানো হয়। অপরদিকে, কৃষি শ্রমিক সাইফুল জানান, সন্ত্রাসী সজল নুরপুর থেকে তাকে একটি মোটরসাইকেলে জোর করে তুলে প্রেমতলায় নিয়ে যায়। সেখানে চোখমুখ ও হাত বেধে প্রচণ্ড পিটায় সন্ত্রাসী সজল। আহত করার পর তার কাছেও দুই লাখ টাকা দাবি করে ওই সন্ত্রাসী।
খবর পেয়ে বল্টুরামটিলা এলাকা থেকে ১০-১৫ জন যুবক মোটরসাইকেলে করে প্রেমতলায় গেলে সন্ত্রাসী সজল ত্রিপুরা পালিয়ে যায়। পরে আহত তিনজনকে তারা উদ্ধার করে রামগড় হাসপাতালে ভর্তি করায়। হাসপাতলে গিয়ে দেখা যায়, আহত তিনজনের পিঠসহ শরীরের বিভিন্ন স্থানে শক্ত লাঠির প্রচণ্ড আঘাতে কালো হয়ে গেছে। অসহ্য ব্যথায় তারা হাসপাতালের বেডে কাঁতরাচ্ছেন। এ ঘটনায় গ্রামবাসীদের মধ্যে উত্তেজনা সৃস্টি হয়। এদিকে, দুই সিএনজি চালককে অমানুষিকভাবে মারধর করার ঘটনার প্রতিবাদে আজ রবিবার রামগড়-বৈদ্যপাড়, রামগড়- পিলাক ও রামগড় -যৌথখামার সড়কে সিএনজি অটোরিকসা ধর্মঘটের সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে। রামগড় সিএনজি অটোরিকসা চালক সমবায় সমিতির সাধারণ সম্পাদক হৃদয় রহমান রনি জানান, তাদের দুই সিএনজি চালককে অমানুষিকভাবে নির্যাতনের প্রতিবাদে তারা আজ সকাল থেকে রামগড়ের তিনটি সড়কে দিনব্যাপী সিএনজি ধর্মঘট পলন করছে। সন্ত্রাসীর হামলায় তিন ব্যক্তির আহতর ঘটনার বিষয়ে জানতে রামগড় থানার অফিসার ইনচার্জ (ওসি)-কে একাধিকবার কল করেও পাওয়া যায়নি।