পহেলা ফেব্রুয়ারি থেকে কার্যকর হবে শিল্প খাতে ব্যবহৃত গ্যাসের নতুন দাম। এতে গ্যাসভিত্তিক বিদ্যুৎ উৎপাদন ব্যয় বাড়বে। এ জন্য সরকারের বিদ্যুৎ দপ্তর পাইকারি ও খুচরা পর্যায়ে আরও এক দফা বিদ্যুতের দাম বাড়ানোর প্রস্তাব ঠিক করে রেখেছে। এর প্রভাবে নিত্যপণ্যের দাম বাড়বে। অন্যদিকে, রমজান ঘনিয়ে আসায় এরই মধ্যে চোখ রাঙাতে শুরু করেছে নিত্যপণ্যের দাম। প্রতিকারে সরকারের শীর্ষ পর্যায় থেকে ব্যাপক উদ্যোগ নেওয়া হলেও তার কোনো কার্যকর প্রভাব পড়ছে না বাজারে। একদিকে ব্যাংকে ডলার সংকটে ঋণপত্র বা এলসি করতে পারছে না অন্যদিকে, এসব অজুহাত কাজে লাগিয়ে অযৌক্তিকভাবে দাম বাড়াচ্ছে ব্যবসায়ীরা। উৎপাদক, সরবরাহকারী ও পরিশোধনকারী কোম্পানির সঙ্গে সরকার আলাপ-আলোচনা করে যে দাম ঠিক করে দিচ্ছে, খুচরা পর্যায়ে গত ছয় মাসে তা বাস্তবায়ন করছে না সংশ্লিষ্ট ব্যবসায়ীরা। সাধারণ মানুষ থেকে শুরু করে বিত্তশালীরাও জীবনযাত্রা ব্যয়ের লাগাম টানছেন। এর সঙ্গে যোগ হয়েছে রমজান মাসের চিন্তা। পরিস্থিতি মোকাবিলায় আমদানি প্রক্রিয়া ঠিক না থাকলে রমজানে পণ্যমূল্য কাঙ্ক্ষিত সীমায় রাখা কঠিন হয়ে যাবে বলে মনে করছেন বাজার সংশ্লিষ্ট ও বিশ্লেষকরা
আমদানিনির্ভর নিত্যপণ্যের বাজারে অস্থিরতার পূর্বাভাস পাওয়া যাচ্ছে। গত বছরের এই সময়ের তুলনায় নিত্যপণ্যের বাজারে প্রায় সব পণ্যের দাম বেড়েছে দুই থেকে ১০০ গুণের বেশি। চাল, ডাল, আটা-ময়দা, ভোজ্যতেল, পেঁয়াজ, রসুন, আদা, শুকনা মরিচ, হলুদ, জিরা, তেজপাতা, মাছ-মাংস, গুঁড়া দুধ, চিনি, লবণ, খেজুর, ডিম, আলু, শাকসবজি এবং লেখার কাগজের দাম থেমে থেমেই বাড়ছে। কমার কোনো লক্ষণ আপাতত দেখা যাচ্ছে না। করোনা-পরবর্তী ইউক্রেন-রাশিয়া যুদ্ধের প্রভাবে দেশে দেশে নিত্যপণ্যের বাজারে অস্থিরতা বিরাজ করছে বলে মনে করছেন বাজার বিশ্লেষকরা।
বাজার পরিস্থিতি বিশ্লেষণে দেখা গেছে, সাম্প্রতিক সময়ে ভোগ্যপণ্যের এলসি বা ঋণপত্র খোলার হার কমছে উল্লেখযোগ্য হারে। যদিও পরিস্থিতি মোকাবিলায় খাদ্যপণ্যের আমদানি সহজ ও সরবরাহ স্বাভাবিক রাখতে নীতিনির্ধারণী পর্যায়ে চলছে দফায় দফায় বৈঠক। বিশেষ করে এলসি খোলার জন্য বৈদেশিক মুদ্রার রিজার্ভ থেকে বাণিজ্যিক ব্যাংকে ডলার সরবরাহে বাংলাদেশ ব্যাংককে অনুরোধ জানিয়েছে বাণিজ্য মন্ত্রণালয়। এর মধ্যে ফেব্রুয়ারি মাস থেকে শিল্প খাতে গ্যাসের নতুন দাম কার্যকর হবে। পাশাপাশি গ্যাসের দাম বাড়ায় গ্যাসভিত্তিক বিদ্যুৎ উৎপাদন ব্যয়ও বাড়বে। এ জন্য আগে থেকে সরকারের বিদ্যুৎ দপ্তর পাইকারি ও খুচরা পর্যায়ে আরও এক দফা বিদ্যুতের দাম বাড়ানোর প্রস্তাব করে রেখেছে। আর এসবের প্রভাবে নিত্যপণ্যের বাজার চোখ রাঙাচ্ছে ভোক্তার দিকে।