এমএফএস ব্যবহার করে হুন্ডিতে জড়িত দুটি চক্রের ছয় সদস্যকে গ্রেপ্তারের পর গতকাল মঙ্গলবার এসব তথ্য জানায় পুলিশের অপরাধ তদন্ত বিভাগ (সিআইডি)। গ্রেপ্তারকৃতরা হলো- মীর মো. কামরুল হাসান শিশির, খোরশেদ আলম, ইব্রাহিম খলিল, কাজী শাহনেওয়াজ, আজিজুল হক তালুকদার ও নিজাম উদ্দিন। সোমবার রাত ও গতকাল মঙ্গলবার কুমিল্লা ও ঢাকায় এই অভিযান চালানো হয়। অভিযানে ১১টি মোবাইল ফোন, ১৮টি সিম কার্ড, একটি ল্যাপটপ ও একটি ট্যাব উদ্ধার করা হয়েছে।
মোবাইল ফিন্যান্সিয়াল সার্ভিস (এমএফএস) ব্যবহার করে চার মাসে তিন কোটি টাকা হুন্ডি করেছে একটি চক্র। গত এপ্রিল থেকে আগস্ট পর্যন্ত দুটি এজেন্ট সিম দিয়ে এই লেনদেন হয়। এ বিষয়ে অনুসন্ধান করতে নেমে এমন আরও ১১টি সিমের খোঁজ পাওয়া গেছে। সে সঙ্গে জানা গেছে, দুই হাজার এজেন্ট সিমের মধ্যে বেশ কিছু এজেন্ট হুন্ডির সঙ্গে সরাসরি জড়িত। ডিজিটাল হুন্ডির এই প্রক্রিয়া সহজ, নির্ভুল ও দ্রুত করতে তারা কিছু সফটওয়্যারও ব্যবহার করছে।গতকাল দুপুরে রাজধানীর মালিবাগে সিআইডি কার্যালয়ে এক সংবাদ সম্মেলনে সিআইডিপ্রধান অতিরিক্ত আইজিপি মোহাম্মদ আলী মিয়া বলেন, সংঘবদ্ধ হুন্ডি কারবারি চক্র প্রবাসী বাংলাদেশিদের কষ্টার্জিত বৈদেশিক মুদ্রা দেশে না পাঠিয়ে ওই মুদ্রার সমপরিমাণ অর্থ স্থানীয় মুদ্রায় পরিশোধ করছে। তারা তিনটি গ্রুপে ভাগ হয়ে এ কাজ করে। প্রথম গ্রুপ বিদেশে অবস্থান করে প্রবাসীদের কাছ থেকে বৈদেশিক মুদ্রা সংগ্রহ করে এবং দেশ থেকে যারা টাকা পাচার করতে চায়, তাদের হাতে তুলে দেয়। দ্বিতীয় গ্রুপ পাচারকারী ও তার সহযোগীরা দেশীয় মুদ্রায় ওই অর্থ এমএফএস এজেন্টকে দেয়। তৃতীয় গ্রুপ অর্থাৎ এমএফএস এজেন্ট বিদেশে অবস্থানকারীর কাছ থেকে পাওয়া এমএফএস নম্বরে দেশীয় মুদ্রা বা টাকায় তা পরিশোধ করে।সিআইডিপ্রধান জানান, কুমিল্লার লাকসামে গ্রেপ্তার খোরশেদ আলমের দুই হাজার এজেন্ট সিমের মাধ্যমে প্রতি মাসে কোটি কোটি টাকা লেনদেন হয়। এর মধ্যে সিআইডি সন্দেহজনক দুটি এজেন্ট সিম নিয়ে কাজ করে, যার মাধ্যমে গত কয়েক মাসে তিন কোটি টাকার সন্দেহজনক লেনদেনের তথ্য পায়। গ্রেপ্তারকৃতদের প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদ ও সিআইডির অনুসন্ধানে জানা যায়, ফ্রিডম ফ্লেক্সি ২৪ ডটকম নামে একটি সফটওয়্যারের মাধ্যমে সৌদি আরব প্রবাসী হুন্ডি কারবারিরা এ কার্যক্রম চালিয়ে আসছে। বাংলাদেশে যে নম্বরগুলোতে টাকা পাঠানো হবে, সেই নম্বরগুলো তারা সফটওয়্যারে ইনপুট দিত। সংবাদ সম্মেলনে জানানো হয়, এমএফএসের মাধ্যমে হুন্ডি হচ্ছে এমন পাঁচ হাজারের বেশি এজেন্ট অ্যাকাউন্টের সন্ধান পায় সিআইডি।