‘বাংলাদেশের জন্য জাতীয় লজিস্টিকস শিল্প উন্নয়ন নীতি প্রণয়ন: বৈশ্বিক ধারণা থেকে অভিজ্ঞতা গ্রহণ’ শীর্ষক দুই দিনের এক কর্মশালার সমাপনী অনুষ্ঠানে এমন মত এসেছে। শিল্প মন্ত্রণালয়, বিজনেস ইনিশিয়েটিভ লিডিং ডেভেলপমেন্ট (বিল্ড) এবং বিশ্বব্যাংক গ্রুপের যৌথ উদ্যোগে কর্মশালা অনুষ্ঠিত হয়। সড়কপথের ওপর নির্ভরশীলতা কমাতে সমুদ্র ও অভ্যন্তরীণ নৌপথ এবং রেলপথে পণ্য পরিবহনের একটি জাতীয় কৌশল গ্রহণের সুপারিশ এসেছে লজিস্টিকস খাত নিয়ে এক আলোচনায়। ওই অনুষ্ঠানে বক্তারা বলেছেন, সড়কে যানজট বাংলাদেশের লজিস্টিকস উন্নয়নে অন্যতম বাধা। যানজট কমানো গেলে রপ্তানি বাড়াতে তা খুব সহায়ক হবে।
গতকাল রাজধানীর হোটেল ইন্টারকন্টিনেন্টালে কর্মশালার সমাপনী অধিবেশন রেলপথমন্ত্রী নূরুল ইসলাম সুজন বলেন, একটি আধুনিক রেলব্যবস্থা ছাড়া পরিবহন ব্যয় কমিয়ে আনা সম্ভব নয়। রেলপথ মন্ত্রণালয়ের চলমান প্রকল্পগুলো বাংলাদেশকে ট্রান্স-এশিয়ান রেলওয়ে নেটওয়ার্কের সঙ্গে সংযুক্ত হতে সহায়তা করবে, যা কিনা নতুন রপ্তানি বাজার সৃষ্টিতে সহায়তা করবে। বাংলাদেশকে দক্ষিণ এশিয়ার একটি মাল্টিমোডাল লজিস্টিকস হাবে পরিণত করতে রেলপথ মন্ত্রণালয় সমন্বিতভাবে সব ধরনের সহায়তা দেবে।নৌপরিবহন মন্ত্রণালয়ের সচিব মোস্তফা কামাল বলেন, লজিস্টিকস খাতকে অগ্রাধিকার বিবেচনায় সরকার ইতোমধ্যে বেশ কিছু মেগা প্রকল্প হাতে নিয়েছে। তবে কাস্টমস ও জাতীয় রাজস্ব বোর্ডের কার্যক্রম সম্পূর্ণ অটোমেশন ছাড়া এসব উদ্যোগ কাজে আসবে না। মাল্টিমোডাল যোগাযোগ ব্যবস্থাপনা নিশ্চিত করতে সরকারি ও বেসরকারি খাত এবং উন্নয়ন সহযোগীদের মধ্যে সমন্বয় সাধন জরুরি।
অনুষ্ঠানে দুটি উপস্থাপনা তুলে ধরেন সড়ক পরিবহন ও মহাসড়ক বিভাগের সচিব এবিএম আমিন উল্লাহ নুরী ও বিশ্বব্যাংকের রিজিওনাল কানেক্টিভিটি অ্যান্ড লজিস্টিকস নলেজ গ্রুপের গ্লোবাল লিড মার্থা বি লরেন্স।
এবিএম আমিন উল্লাহ নুরী তাঁর উপস্থাপনায় বলেন, যদিও বাংলাদেশে একটি বৈশ্বিক মানের মাল্টিমোডাল যোগাযোগ ব্যবস্থা স্থাপন করা সম্ভব হয়নি, তবে ‘জাতীয় সমন্বিত মাল্টিমোডাল যোগাযোগ ব্যবস্থা নীতি-২০১৩’-এ সড়ক, রেল, আকাশপথ, সমুদ্র ও অভ্যন্তরীণ নৌপরিবহনের মধ্যে সমন্বয় সাধনের ওপর গুরুত্ব আরোপ করা হয়েছে।
বিশ্বব্যাংকের রিজিওনাল কানেক্টিভিটি অ্যান্ড লজিস্টিকস নলেজ গ্রুপের গ্লোবাল লিড মার্থা বি লরেন্স তাঁর উপস্থাপনায় বলেন, লজিস্টিকস পারফরম্যান্স সূচকে ১৬০টি দেশের মধ্যে বাংলাদেশের অবস্থান ১০০তম। লজিস্টিকস ব্যয় ২৫ শতাংশ কমিয়ে আনা গেলে দেশের রপ্তানি প্রবৃদ্ধি ২০ শতাংশ বাড়ানো সম্ভব।