বিশ্বে হাজারও বিজ্ঞানী, চিন্তাবিদ, পণ্ডিত, লেখক ও অধিকারকর্মী রয়েছেন। এর মধ্যে যারা ভবিষ্যৎকে আরও ভালোভাবে গড়ে তুলতে নিজেদের মেধা ও মননকে কাজে লাগাচ্ছেন, তাদের মধ্য থেকে সেরাদের খুঁজে বের করার চেষ্টা করেছে মার্কিন সংবাদমাধ্যম ভক্স। সেই সেরাদের তালিকাতেই উঠে এসেছেন তরুণ অর্থনীতিবিদ মুশফিক মোবারক।‘বৈশ্বিক ক্ষুধা, দারিদ্র্য ও ন্যায়বিচারহীনতার বিরুদ্ধে লড়াই’ ক্যাটাগরিতে সম্মান দেয়া হয়েছে মুশফিক মুবারককে। তিনি দেখিয়েছেন, সরকার ও বেসরকারি সংস্থার (এনজিও) গৃহীত পদক্ষেপ মানুষের জীবনকে ভালো ও মন্দের দিকে টেনে নেয়। বিষয়টি সহজ মনে হলেও বিশ বছর ধরে হাতে-কলমে এ বিষয়ে গবেষণা করে যাচ্ছেন মুশফিক। উন্মোচন করেছেন অঞ্চল বা মানুষভেদে ভিন্ন ভিন্ন দিক। যুক্তরাষ্ট্রের খ্যাতনামা বিশ্ববিদ্যালয় ইয়েল ইউনিভার্সিটির অর্থনীতির এ অধ্যাপক দেশটির অন্যতম প্রভাবশালী গণমাধ্যম ভক্স-এর বাছাই করা বিশ্বের সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ ৫০ ব্যক্তির তালিকা ‘ফিউচার পারফেক্ট ৫০’-এ স্থান করে নিয়েছেন।মুশফিকের জন্ম ১৯৭৬ সালে বাংলাদেশের রাজধানী ঢাকার কাকরাইলে। বেড়ে উঠেছেন ঢাকার কলাবাগানে। শিক্ষাজীবনের শুরুতে অল্প সময়ের জন্য ঢাকার সানবিমস স্কুলে গিয়েছিলেন।
এরপর সেখান থেকে চলে যান মোহাম্মদপুরের সেইন্ট জোসেফ স্কুলে। ভর্তি হন নবম শ্রেণিতে। সেখান থেকে তাকে ভারতের তামিলনাড়ুর একটি বোর্ডিং স্কুলে পাঠিয়ে দেয়া হয়। এরপর সেখান থেকে উচ্চশিক্ষার জন্য পাড়ি জমান যুক্তরাষ্ট্রে।
যুক্তরাষ্ট্রের ম্যাকালেস্টার কলেজ থেকে ১৯৯৯ সালে গণিত ও অর্থনীতিতে স্নাতক ডিগ্রি সম্পন্ন করেন মুশফিক। এতে চার বছরের জায়গায় তার সময় লাগে মাত্র তিন বছর। ইউনিভার্সিটি অব মেরিল্যান্ড থেকে অর্থনীতিতে পিএইচডি করেন তিনি। পেশাগত জীবনে প্রথমে বিশ্বব্যাংক ও আন্তর্জাতিক মুদ্রা তহবিলের হয়ে কাজ করেন মুশফিক।
এরপর ২০০২ সালে তিনি ইউনিভার্সিটি অব কলোরাডোতে শিক্ষকতা শুরু করেন। চার বছর পর ইয়েল ইউনিভার্সিটিতে সহযোগী অধ্যাপক হিসেবে যোগ দেন। এর মধ্যে আরও বেশ কিছু বিশ্ববিদ্যালয় থেকে শিক্ষকতার প্রস্তাব পেলেও ইয়েল ইউনিভার্সিটিতেই স্থায়ীভাবে থেকে যাওয়ার সিদ্ধান্ত নেন। ২০১৫ সালে এখানেই পূর্ণ অধ্যাপক পদে উন্নীত হন।
মূলত উন্নয়ন অর্থনীতিবিদ হিসেবে পরিবেশগত বিষয় নিয়ে কাজ করা মুশফিক তার নিজ দেশ বাংলাদেশ ছাড়াও পাকিস্তান, নেপাল, সিয়েরা লিওন ও ইন্দোনেশিয়ায় চলমান বিভিন্ন গবেষণা প্রকল্পের কাজ করছেন।