ব্রুনাইয়ের ব্যবসায়ীদের বাংলাদেশে বিনিয়োগের আহ্বান জানিয়ে বাণিজ্যমন্ত্রী বলেন, সরকারের বিদেশি বিনিয়োগবান্ধব নীতিমালার কারণে বাংলাদেশ এখন বৈশ্বিক উদ্যোক্তাদের জন্য আদর্শ গন্তব্য। এ দেশে কারখানা স্থাপনের মাধ্যমে সাড়ে ১৬ কোটি মানুষের অভ্যন্তরীণ বাজারের পাশাপাশি চীন-ভারতের ২৭০ কোটি মানুষের বাজারও ধরা যাবে। কেননা দুটি দেশেই বেশিরভাগ পণ্যে শুল্ক্কমুক্ত সুবিধা পায় বাংলাদেশ।বাণিজ্যমন্ত্রী টিপু মুনশি বলেছেন, ব্রুনাইয়ে বাংলাদেশি শ্রমিকদের জামানত হিসেবে ১ হাজার ৬০০ ডলার দিতে হয়। অথচ মালয়েশিয়ার জন্য এটি ৫০০ ডলার। এই বৈষম্য দূর করার উদ্যোগ নিতে ব্রুনাই সরকারের প্রতি আহ্বান জানিয়েছেন তিনি। গতকাল রোববার সকালে রাজধানীর একটি হোটেলে ব্রুনাইয়ের অর্থমন্ত্রী দাতো সেরি সেটিয়া ড. আওয়াং হাজি মোহাম্মদ আমিন লিউ আবদুল্লাহ এবং স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী দাতো সেরি পাদুকা আওয়াং হাজি আহমাদদিন বিন হাজি আবদুল রহমানের সঙ্গে বৈঠকে এসব কথা তুলে ধরেন বাণিজ্যমন্ত্রী।
পররাষ্ট্র প্রতিমন্ত্রী মো. শাহরিয়ার আলম ব্রুনাইকে বাংলাদেশ থেকে আরও বেশি মানবসম্পদ নেওয়ার আহ্বান জানান। এ ছাড়া আসিয়ানভুক্ত দেশগুলোর জন্য আলাদা একটি অর্থনৈতিক অঞ্চল প্রতিষ্ঠার প্রস্তাব দিয়ে ব্রুনাইয়ের ব্যবসায়ীদের বিনিয়োগের আহ্বান জানান তিনি।
বৈঠকে ব্রুনাইয়ের অর্থমন্ত্রী তাঁর দেশকে ট্রান্সশিপমেন্ট হাব হিসেবে ব্যবহারের জন্য বাংলাদেশি ব্যবসায়ীদের প্রতি আহ্বান জানান। তিনি বলেন, ব্রুনাইয়ের বন্দর ব্যবহার করলে চীনের সঙ্গে দূরত্ব অনেক কমবে। খরচ ও সময়ের সাশ্রয় হবে।
বাংলাদেশি কর্মীদের প্রশংসা করেন ব্রুনেইয়ের স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী। তিনি বলেন, ব্রুনাইয়ের অর্থনৈতিক অগ্রগতিতে বাংলাদেশি কর্মীর বিশেষ ভূমিকা রয়েছে।
এফবিসিসিআই সভাপতি মো. জসিম উদ্দিন বলেন, বাংলাদেশের বর্তমান অগ্রগতির চিত্র অতীতের তুলনায় ভিন্ন। এই অগ্রযাত্রায় শামিল হতে পারে ব্রুনাই। হালাল খাবার, খাদ্য প্রক্রিয়াজাতকরণ, আইসিটি, প্লাস্টিক, পেট্রোকেমিক্যাল, অবকাঠামো উন্নয়ন, পেট্রোলিয়াম, জ্বালানি খাতে দুই দেশের বাণিজ্য ও বিনিয়োগ সম্পর্ক আরও এগিয়ে নেওয়া সম্ভব।
আরও বক্তব্য দেন বিজিএমইএর সভাপতি ফারুক হাসান, ফিকির সভাপতি নাসের এজাজ ও এফবিসিসিআই পরিচালক প্রীতি চক্রবর্তী। উপস্থিত ছিলেন এফবিসিসিআইর সহসভাপতি মো. আমিন হেলালী, সালাহউদ্দিন আলমগীর ও মো. হাবীব উল্ল্যাহ ডন।
বৈঠক শেষে হালাল খাদ্যপণ্য বিপণনে ব্রুনাইয়ের ঘানিম ইন্টারন্যাশনাল ও বাংলাদেশের জেডইএস ট্রেডিংয়ের মধ্যে সমঝোতা চুক্তি সই হয়। ঘানিম ইন্টারন্যাশনালের পক্ষে সিইও ড. নূর রহমান ও জেডইএস ট্রেডিংয়ের পক্ষে এফবিসিসিআই পরিচালক ড. কাজী এরতেজা হাসান চুক্তিতে সই করেন। পরে গুলশানের ইউনিমার্ট লবিতে ব্রুনেই হালাল ফুডের পণ্য সামগ্রী বিক্রির জন্য একটি আউটলেটের উদ্বোধন করেন ব্রুনাইয়ের অর্থমন্ত্রী ও স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী।