গত ৬ আগস্ট এক লাফে প্রতি লিটার ডিজেলের দাম ৩৪ টাকা বাড়িয়ে ১১৪ টাকা করা হয়। অবশ্য এর ২৩ দিন পর ৫ টাকা কমানো হয়।
এই ডিজেলের বড় গ্রাহক রফতানিমুখী তৈরি পোশাক খাত। বর্তমানে যখন শিল্পখাতে চাহিদামতো গ্যাস-বিদ্যুৎ মিলছে না, তখন একপ্রকার ডিজেলেই চলছে পোশাকশিল্প, যা বাড়িয়ে দিচ্ছে পণ্যের উৎপাদন ব্যয়, আর কমিয়ে দিচ্ছে শিল্পটির প্রতিযোগিতা সক্ষমতা।
এবার তাই বিশ্ববাজারে টিকে থাকার প্রশ্ন সামনে এনে ডিজেলের দাম কমাতে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার হস্তক্ষেপ কামনা করে গত ২ অক্টোবর চিঠি দিয়েছে বিজিএমইএ। তাদের যুক্তি, বিশ্ববাজারে ডিজেলসহ জ্বালানির দাম কমছে।
এ বিষয়ে বিজিএমইএ’র সভাপতি ফারুক হাসান বলেন, ‘যেহেতু এখন লোডশেডিং চলছে, পাশাপাশি গ্যাসের সংকট রয়েছে, সেহেতু আমাদের জেনারেটর চালাতে হচ্ছে। এগুলো চালাতে হলে আমাদের প্রচুর ডিজেল ব্যবহার করতে হচ্ছে। এদিকে, ডিজেলে বাড়তি খরচ হচ্ছে, অন্যদিকে ডিজেলের দাম বাড়ার কারণে আমাদের উৎপাদন ব্যয় অনেক বেড়েছে। বর্তমানে সব ধরনের তেলের দাম বিশ্ববাজারে কমেছে। এ সময় যদি দাম কমিয়ে আগের পর্যায়ে নিয়ে যাওয়া হয়, তাহলে জনগণও উপকৃত হবে, একইসঙ্গে আমরা উদ্যোক্তারা উৎসাহিত হব। অন্যথায় আমাদের যে রফতানি কমে গেছে, সেটি বাড়ানো আমাদের জন্য বেশ কঠিন হবে।’
পরিসংখ্যান বলছে, আগস্টের তুলনায় সেপ্টেম্বরে পোশাক খাতের রফতানি আয় কমেছে ৫৮ কোটি ৪১ লাখ ডলার। এমন চ্যালেঞ্জের মুখে পড়া রফতানিমুখী শিল্পের পাশাপাশি অর্থনীতির সার্বিক চিত্র বিবেচনাতেই জ্বালানির দাম সমন্বয় করার তাগিদ দিয়েছেন অর্থনীতিবিদরা।
অর্থনীতিবিদ খোন্দকার গোলাম মোয়াজ্জেম বলেন, ‘দেশে যে ধরনের দুর্ভোগ দেখা দিয়েছে বা শিল্প উৎপাদন ব্যয় যেভাবে বেড়েছে এবং প্রতিযোগিতা সক্ষমতার পরিস্থিতি বিরাজ করছে, তাতে শুধু রফতানিমুখী শিল্প নয়, যেকোনো শিল্পপণ্যের জন্যই জ্বালানির উচ্চমূল্য একটি মাথাব্যথার কারণ। যেদিক থেকে উৎপাদকদের যতটুকু সাশ্রয় দেয়া যায়, সে বিবেচনায় আমার মনে হয় জ্বালানি মন্ত্রণালয় আন্তর্জাতিক বাজারের সঙ্গে প্রতি ১৫ দিন পরপর সমন্বয় সাধনের বিষয়টি বিবেচনা করতে পারে।’
ডিজেলের দাম কমালে ফুলে ওঠা মূল্যস্ফীতি কমবে। তাতে কিছুটা হলেও দেশের অর্থনীতিতে স্বস্তি ফিরবে বলে মনে করছেন বিশ্লেষকরা।