৭৭ একর জমির ওপর গড়ে তোলা চতুর্ভুজ পাল আমলের পাহাড়পুর বৌদ্ধবিহারটি যুগ যুগ ধরে মানুষের কাছে অজানা এক রহস্যের আধার। প্রতিবছর দেশ-বিদেশ থেকে অন্তত পাঁচ লাখ মানুষ এ বিহার দেখতে আসেন। কিন্তু পর্যাপ্ত সুযোগ সুবিধা না থাকায় ঘুরতে আসা দর্শনার্থীদের বেকায়দায় পড়তে হতো। এ অবস্থায় পাহাড়পুর বৌদ্ধবিহারকে দর্শনার্থীবান্ধব করতে ২০১৭ সালে ২৫ কোটি টাকা ব্যয়ে একটি উন্নয়ন প্রকল্প হাতে নেয় সরকার। এ পর্যন্ত প্রায় ৯৫ শতাংশ কাজ শেষ হয়েছে।ঐতিহাসিকদের মতে, অষ্টম শতাব্দীর গোড়ায় পাল বংশের দ্বিতীয় রাজা ধর্মপাল এ বৌদ্ধবিহার নির্মাণ করেন। আধুনিক আদলে গড়ে তোলা এ নগরে শিক্ষাকে অগ্রাধিকার দেয়া হয়। আর সে সময়ে এ শিক্ষাকেন্দ্রে জ্ঞানচর্চার জন্য তিব্বত, চীন, মালয়েশিয়াসহ বিশ্বের বিভিন্ন প্রাপ্ত থেকে বৌদ্ধ ভিক্ষুরা এসেছিলেন।
এ প্রকল্পের অওতায় স্থানটিতে পর্যটকদের সুবিধার্থে বাউন্ডারি ওয়াল, মিনি ফুডকোর্ট, মিনি ফুট ওভারব্রিজ ও বসার স্থান করা হয়েছে। দর্শনার্থীরা বলেন, বৌদ্ধবিহারের প্রাকৃতিক সৌন্দর্য তাদের মুগ্ধ করেছে।সারা বছর আনাগোনা থাকলেও সেপ্টেম্বর থেকে নভেম্বরে দর্শনার্থীর ঢল কয়েক গুণ বাড়ে।
এদিকে টুরিজম বোর্ড পাহাড়পুরে কমিউনিটিভিত্তিক হোম স্টে চালু করতে যাচ্ছে। এ ছাড়া পাহাড়পুরকে আরও আকর্ষণীয় করতে কাজ করার কথা জানান স্থানীয় সংসদ সদস্য মো. সলিম উদ্দিন তরফদার। তিনি বলেন, বাইরে থেকে যেসব পর্যটক আসেন, তাদের জন্য মোটেল করার কথা ভাবা হচ্ছে।
টুরিজম বোর্ডের সহকারী পরিচালক মো. বোরহান উদ্দিন বলেন, ‘আমরা নারী-পুরুষকে ট্রেনিং দিচ্ছি যাতে তারা এখানের ঐতিহ্য তুলে ধরতে পারেন।’
উল্লেখ্য, ১৯৮৫ সালে পাহাড়পুর বৌদ্ধবিহারকে বিশ্ব ঐতিহ্য হিসেবে ঘোষণা করে ইউনেস্কো।