জানা গেছে, আমদানি দায় পরিশোধ বাবদ গত জুলাইয়ে ৫৮৬ কোটি ডলার ব্যয় হয়েছে। এ হিসাবে বর্তমানের রিজার্ভ দিয়ে ৬ মাসের আমদানি দায় নিষ্পত্তি করা সম্ভব। অবশ্য আইএমএফের মানদণ্ড বিবেচনায় নিলে দেশের রিজার্ভ এখন ৩০ বিলিয়ন ডলারের নিচে। বিভিন্ন তহবিলে জোগান দেওয়া অর্থ বাদ দিয়ে যে রিজার্ভ আছে, তা প্রায় ৫ মাসের আমদানি দায়ের সমান।দেশের বৈদেশিক মুদ্রার রিজার্ভ আরও কমে ৩৭ বিলিয়ন ডলারের নিচে নেমেছে। ২০২০ সালের ২৮ জুলাইয়ের পর রিজার্ভ যা সর্বনিম্ন। গতকাল দিনশেষে রিজার্ভ দাঁড়ায় ৩৬ দশমিক ৯৮ বিলিয়ন ডলারে। আগের দিন মঙ্গলবার যা ৩৭ দশমিক শূন্য ৬ বিলিয়ন ডলারের বেশি ছিল। মূলত বৈদেশিক মুদ্রার চাহিদার তুলনায় সরবরাহ কম থাকায় বাংলাদেশ ব্যাংক প্রতিনিয়ত ডলার বিক্রির ফলে এভাবে রিজার্ভ কমছে।বাংলাদেশ ব্যাংক গতকাল দুটি ব্যাংকের কাছে ৬ কোটি ডলার বিক্রি করেছে। আগের দিন বিক্রি করে আরও ৭ কোটি ডলার। এ নিয়ে চলতি অর্থবছরের শুরু থেকে এ পর্যন্ত বিক্রি করেছে ৩১২ কোটি ৭৫ লাখ ডলার। গত অর্থবছর বিক্রি করে ৭৬২ কোটি ১৭ লাখ ডলার। গত ৮ সেপ্টেম্বর এশিয়ান ক্লিয়ারিং ইউনিয়নে (আকু) ১৭৩ কোটি ডলার পরিশোধের পর রিজার্ভ নামে ৩৭ দশমিক শূন্য ৬ বিলিয়ন ডলারে। গত জুলাই মাসে আকুতে ১ দশমিক ৯৬ বিলিয়ন পরিশোধের পর রিজার্ভ ৪০ বিলিয়ন ডলারের নিচে নামে। আর গত মে মাসে ২২৪ কোটি ডলার পরিশোধের পর রিজার্ভ নামে ৪২ বিলিয়ন ডলারের নিচে।
সংশ্নিষ্টরা জানান, সাম্প্রতিক সময়ে আমদানি ব্যাপক বাড়লেও রপ্তানি ও রেমিট্যান্স সে তুলনায় বাড়ছে না। অবশ্য আমদানি ব্যয় কমানো ও রেমিট্যান্স বাড়াতে বিভিন্ন উদ্যোগ চলমান আছে। বৈদেশিক মুদ্রার রিজার্ভে ব্যাপক উল্লম্ম্ফন ঘটে ২০২০ সালে করোনাভাইরাসের প্রভাব শুরুর পর। ২০২০-২১ অর্থবছরে ব্যাংকিং চ্যানেলে রেকর্ড ২৪ দশমিক ৭৮ বিলিয়ন ডলারের রেমিট্যান্স আসে। আবার রপ্তানিতেও ১৫ শতাংশের বেশি প্রবৃদ্ধি ছিল। যে কারণে ২০২০ সালের শুরুর দিকে ৩২ বিলিয়ন ডলারের ঘরে থাকা রিজার্ভ বেড়ে গত বছরের আগস্টে ৪৮ বিলিয়ন ডলারের ঘর অতিক্রম করে। বৈদেশিক মুদ্রার রিজার্ভ প্রথমবারের মতো ৩৬ বিলিয়ন ডলারের ঘর অতিক্রম করে ২০২০ সালের ৩০ জুন।
এদিকে, গতকাল আন্তঃব্যাংকে ডলার বেচাকেনার সর্বনিম্ন ও সর্বোচ্চ দরে পার্থক্য কিছুটা কমেছে। গতকাল সর্বনিম্ন দর ছিল ১০১ টাকা ৭৮ পয়সা। আর সর্বোচ্চ দর ছিল ১০২ টাকা ৫৬ পয়সা। আগের দিন সর্বনিম্ন ৯৯ টাকা ৬৫ পয়সা এবং সর্বোচ্চ ১০৮ টাকা ছিল। বাংলাদেশ ব্যাংকের মধ্যস্থতায় ব্যাংকগুলো গত ১২ সেপ্টেম্বর থেকে সর্বোচ্চ ১০৮ টাকায় রেমিট্যান্স এবং ৯৯ টাকায় রপ্তানি বিল নগদায়ন করছে। এ দুইয়ের গড় দরের ভিত্তিতে আমদানি দায় নিষ্পত্তি করছে।