গতকালের লেনদেন বৃদ্ধিতে সবচেয়ে বেশি ভূমিকা রেখেছে বেক্সিমকো লিমিটেড, ওরিয়ন ফার্মা, বাংলাদেশ শিপিং করপোরেশন, একমি ল্যাবরেটরিজ ও লাফার্জ-হোলসিম সিমেন্ট। সম্মিলিতভাবে এ পাঁচ কোম্পানির ১ হাজার ৫৬ কোটি টাকার শেয়ার কেনাবেচা হয়েছে, যা মোটের সোয়া ৩৭ শতাংশ। সোমবার সম্মিলিতভাবে এসব কোম্পানির লেনেদন ছিল ৪১৪ কোটি টাকা।দেশের প্রধান শেয়ারবাজারে লেনদেন ২ হাজার ৮০০ কোটি টাকা ছাড়িয়েছে। গতকাল মঙ্গলবার ডিএসইতে ২ হাজার ৮৩২ কোটি টাকার শেয়ার কেনাবেচা হয়েছে, যা স্টক এক্সচেঞ্জটির ইতিহাসে শীর্ষ ১৫তম লেনদেন এবং গত এক বছরের সর্বোচ্চ। গত বছরের ৭ অক্টোবর ২ হাজার ৮৬৬ কোটি টাকার শেয়ার লেনদেন হয়েছিল।গতকাল ডিএসইতে ৩৭৩ কোম্পানির শেয়ার ও মিউচুয়াল ফান্ডের কেনাবেচা হয়েছে। এর মধ্যে লেনদেনের শীর্ষে থাকা ৫০ শেয়ারের ২ হাজার ২৭০ কোটি টাকার লেনদেন হয়, যা মোটের ৮০ শতাংশের বেশি। প্রথম ১০০টি শেয়ারের লেনদেন ছিল মোটের ৯১ শতাংশের বেশি।
ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের অ্যাকাউন্টিং অ্যান্ড ইনফরমেশন বিভাগের শিক্ষক ড. আল-আমীন বলেন, লেনদেন বৃদ্ধিতে বিশেষত্ব নেই। কারণ, গুটিকয় শেয়ার ঘিরেই লেনদেন বেড়েছে। এ লেনদেনে সাধারণ বিনিয়োগকারীদের অংশগ্রহণ খুবই কম। ফলে এ খবর শেয়ারবাজারের জন্য খুব ইতিবাচক মনে করার কারণ নেই।
ডিএসইর লেনদেন ইতিহাস পর্যালোচনায় দেখা গেছে, একদিনেই ২ হাজার ৮০০ কোটি টাকার বেশি শেয়ার কেনাবেচা হয়েছে মোট ১৫ কার্যদিবস। এর মধ্যে ২০১০ সালে উত্থানের সময় আট দিন এবং চলতি উত্থান-পতন পর্বে গত বছরের আগস্ট থেকে এখন পর্যন্ত সাত দিন এমন লেনদেন হয়েছে। আবার গত বছরের ৯ আগস্ট থেকে ৫ অক্টোবর পর্যন্ত ছয় দিন লেনদেন ২ হাজার ৮০০ কোটি টাকা ছাড়িয়েছিল।
এদিকে টাকার অঙ্কে উল্লেখযোগ্য পরিমাণ শেয়ার কেনাবেচা হলেও গতকাল অধিকাংশ শেয়ার দর হারিয়েছে। তালিকাভুক্ত ৩৮৬ শেয়ার ও মিউচুয়াল ফান্ডের মধ্যে ১৬৫টি বা প্রায় ৪৩ শতাংশ ফ্লোর প্রাইসে কেনাবেচা হয়েছে। গত সোমবারও ফ্লোর প্রাইসে কেনাবেচা হওয়া শেয়ার ছিল ১৪৯টি। এ অবস্থার কারণ গতকাল ৭২টি শেয়ারের দরবৃদ্ধির বিপরীতে ১৫৬টির দর কমেছে। দর অপরিবর্তিত ছিল ১৪৫ শেয়ারের।
অধিকাংশ শেয়ার দর হারালেও ডিএসইএক্স সূচক মাত্র ৪ পয়েন্ট হারিয়ে ৬৫৯৬ পয়েন্টে নেমেছে। যদিও লেনদেনের শুরুতে গুটিকয় শেয়ারে ভর করে সূচক প্রায় ৭৬ পয়েন্ট বেড়ে ৬৬৭৬ পয়েন্ট ছাড়িয়েছিল, যা ছিল গত ১০ মে বা প্রায় সাড়ে চার মাসের সর্বোচ্চ। বেলা ১টায় সূচকটির অবস্থান ছিল ৬৬৭০ পয়েন্টে। এর ৪৮ মিনিট পর ওই অবস্থান থেকে দ্রুত ৮৪ পয়েন্ট হারিয়ে ৬৫৮৫ পয়েন্টে নেমে আসে। এর কারণ পর্যালোচনায় দেখা গেছে, বেক্সিমকো লিমিটেড ছাড়াও ওষুধ খাতের ওরিয়ন ফার্মা, ওরিয়ন ইনফিউশনসহ মোট ২০ কোম্পানির শেয়ার সার্কিট ব্রেকারের সর্বোচ্চ দরে কেনাবেচা হয়েছিল। যদিও লেনদেন শেষে সেন্ট্রাল ফার্মা ছাড়া ওই দরে আর কোনো শেয়ার ছিল না। লেনদেনের মাঝে সার্কিট ব্রেকারের সর্বোচ্চ দরে কেনাবেচা হয় আমরাটেক, একমি ল্যাব, অ্যাডভেন্ট, এমবি ফার্মা, আজিজ পাইপস, বিডিকম, বসুন্ধরা পেপার, বিএসসি, ইন্দোবাংলা ফার্মা, আইপিডিসি, জেএমআই হসপিটাল রিকুইজিট, কহিনূর কেমিক্যাল, প্রিমিয়ার লিজিং, সী পার্ল, সিলকো ফার্মা, শাহজিবাজার পাওয়ার ও ইউনিয়ন ক্যাপিটাল।